রহমত নিউজ 20 October, 2023 06:55 PM
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ধল-বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরবলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার পতনে আর কয়েকটা দিন আছে। কয়েকটা দিন আছে। এখন কিন্তু মাসও নেই। সেই দিনগুলোতে বুকের মধ্যে সমস্ত সাহস নিয়ে...মারবে তো মারবেই, এগিয়ে যাবো। মারছেই তো, গত ১৫ বছরে আমাদের হাজারো নেতা-কর্মীকে মেরে ফেলেছে। গুম করেছে। আমাদের ৫০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। সরকারি হিসাবে গতকালও ৭৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
আজ (২০ অক্টোবর) শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ময়মনসিংহের বাংলাদশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনালী দল আয়োজিত কৃষি উপকরণ ও খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি: সরকারের অব্যবস্থাপনা- কৃষক এবং জনগণের নাভিশ্বাস শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। সোনালী দলের সভাপতি অধ্যাপক গোলাম হাফিজ সেমিনারে সভাপতিত্ব ও আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনা সেমিনারে বক্তব্য দেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাজমেরি এস এ ইসলাম ও আব্দুস সালাম প্রমুখ।
মির্জা ফখরুল বলেন, কোনো কথা নয়, আসুন আজকে আমরাই সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। একটা জিনিস কিন্তু আশা জোগাবে, সাহস জোগাবে, আজকে দেশের সকল মানুষ এক হয়েছে। সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো এক হয়েছে। বাম ডান সবাই একটা কথাই বলছে, এই সরকারের অধীনে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। হতে পারে না। বিএনপির শান্তিপূর্ণভাবে, নিয়মতান্ত্রিকভাবে, গণতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলন করছে। আমরা খালি হাতে আছি। আমাদের হাতে তো বন্দুক নেই যে আপনাকে ভয় দেখাব, গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসবো। ডিবিতে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার নির্যাতন করবো। সেই ক্ষমতা তো আমার নেই। তাই সবাইক রাস্তায় বেরিয়ে আসতে হবে। আমাদের একটাই ক্ষমতা আছে। মানুষকে সংগঠিত করা, মানুষকে বলা এই অবস্থা থেকে বেরোতে চাইলে, মুক্তি পেতে চাইলে রাস্তায় বেরিয়ে আসতে হবে। এই রাস্তায় বেরিয়ে আসাই তো বড় কথা। আপনি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখবেন বিএনপির নেতাকর্মীরা রাস্তায় কি করছে। সবাইকে রাস্তায় বেরিয়ে আসতে হবে। এখন নতুন সুর শুরু করেছেন—বিএনপি সন্ত্রাসী দল! গতকালও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তো বিএনপি সন্ত্রাসী দল হলে আপনারা কী? আপনারা তো সন্ত্রাসের বাবা। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রকেই সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানিয়ে ফেলেছে, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে পুরোপুরি সন্ত্রাসের রাজত্ব বানিয়ে দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে, এখন একেবারে মৃত্যুবরণ করার মতো অবস্থা হয়ে গেছে। দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি নজিরবিহীন। সব দেশেই কিছু কিছু দাম বেড়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে যেটা বেড়েছে এটা অবিশ্বাস্য ও নজিরবিহীন। এর পেছনে কারণ অনেকগুলো। মূল কারণ জবাবদিহিহীন সরকার। তাকে কোথাও কোনো জবাবদিহি করতে হয় না। ইচ্ছে মতো যা খুশি তাই করতে পারছে। তাদের দুঃশাসন-দুর্নীতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যেখানে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। সাধারণ মানুষ ডিম, ডাল কিনতে পারছে না। শাক কিনতে পারছে না কিন্তু নির্বাচনে ঘুষ দেওয়ার জন্য ইউএনও ও ডিসিদের জন্য ৩৬৫ কোটি টাকা দিয়ে নতুন গাড়ি কেনা হচ্ছে। তাদের টাকা দেওয়া হচ্ছে আলাদা করে। শোনা যাচ্ছে ইতোমধ্যে যারা ডিসি-এসপি, যারা নির্বাচন পরিচালনা করবেন তাদের কাছে টাকা পৌঁছে গেছে। বর্তমান পরিস্থিতির উত্তরণে সরকারকে সড়ানো ছাড়া বিকল্প কিছু নেই, আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই না। জনগণের নূন্যতম অধিকার ফেরত পেতে চাই। খালেদা জিয়াকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হচ্ছে, তাকে চিকিৎসার সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। নির্বাচন কমিশন একটা বানিয়েছে। এটার তো কোনো কিছুই ঠিক নেই। তারা বলছে যদি পরিবেশ অনুকূলে হয়, তাহলে পরিবেশ অনুকূলে নয়! এখনো পরিবেশ অনুকূলে হয়নি। দরকার কি বাবা, পদত্যাগ করো না, আসো আমাদের সঙ্গে। আমাদের সঙ্গে আসো। শেষ বারের মতো সরকারকে বলতে চাই দয়া করে পদত্যাগ করুন। শান্তিতে আপনারা নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারে হাতে ক্ষমতা দিয়ে চলে যান। দেশের মানুষকে বাঁচতে দেন।